Rangpur Crime News

Online News portal bangla Crime News

রাসুল (সা.)-এর বিশেষ সহযোগী
জুবাইর ইবনে আউওয়াম (রা.)

 জুবাইর ইবনে আউওয়াম (রা.)-এর উপাধি ‘হাওয়ারিয়্যু রাসুল’ তথা রাসুল (সা.)-এর  বিশেষ সহযোগী। তিনি জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০ সাহাবির একজন এবং তৃতীয় খলিফা নির্বাচনের জন্য ওমর (রা.) কর্তৃক গঠিত ছয় সদস্যবিশিষ্ট শুরা কমিটির অন্যতম সদস্য। (আল-ইসাবা ২/৪৫৮)

রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ও একাধিক আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল। তাঁর পিতা ‘আউওয়াম’ খাদিজা (রা.)-এর ভাই। মা সাফিয়া বিনতে আব্দুল মুত্তালিব রাসুল (সা.)-এর ফুফু। বড় হওয়ার পর বিবাহ করেছেন আবু বকর (রা.)-এর বড় মেয়ে আসমা (রা.)-কে, যিনি রাসুল (সা.) প্রিয়তমা সহধর্মিণী আয়েশা (রা.)-এর বৈমাত্রেয় বড় বোন। এভাবে রাসুল (সা.)-এর  সঙ্গে ছিল তাঁর একাধিক আত্মীয়তার সম্পর্ক।

একাধিক আত্মীয়তার সম্পর্কের পাশাপাশি রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে আছে তাঁর ঘনিষ্ঠতাও। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি রাসুল (সা.)-এর অনেক সহযোগিতা করেন। ফলে তিনি প্রিয় নবীর প্রিয় পাত্রে পরিণত হন। খন্দকের যুদ্ধের সময় রাসুল (সা.) আহ্বান করেন, কে আছ প্রস্তুত শত্রুপক্ষ উনু কুরাইজার অবস্থান জেনে আসতে? জুবাইর (রা.) বলেন, আমি প্রস্তুত। রাসুল (সা.) একে একে তিনবার এই আহ্বান করেন। তিনবারই জুবাইর (রা.) বলেন, আমি প্রস্তুত। তখন রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘প্রত্যেক নবীর আছে বিশেষ সহযোগী। আমার বিশেষ সহযোগী হলো জুবাইর।’ (সিয়ারুন আলামিন নুবালা ৩/৩৬)। জুবাইর (রা.) হিজরতের ২৮ বছর আগে জন্মগ্রহণ করেন। ১৬ বছর বয়সে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। প্রথম পর্বে ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে তিনি ছিলেন অনন্য ও বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। যদিও তাঁর বয়স ছিল কম, তবু দৃঢ়তা ও সাহসিকতায় পিছিয়ে ছিলেন না কারো থেকে।

রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে তিনি সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ-জিহাদে তাঁর অংশগ্রহণ ছিল ভূয়সী প্রশংসার যোগ্য। বদরযুদ্ধে তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে লড়েন। মুশরিকদের প্রতিরোধ-ব্যূহ ভেঙে তছনছ করে দেন। তাতে তাঁর তরবারিটি ভোঁতা হয়ে যায় এবং তাঁর সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। একটি ক্ষত এতই মারাত্মক ছিল যে তা চিরদিনের জন্য একটি গর্তের রূপ ধারণ করে। এ যুদ্ধে তাঁর মাথায় হলুদ রঙের পাগড়ি ছিল, যা দেখে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, আজ ফিরিশতারা জুবাইরের বেশে আগমন করেছে। (আল-ইসাবা : ২/৪৫৯)

উহুদের যুদ্ধে মুসলমানদের সাময়িক বিপর্যয় মুহূর্তে রাসুল (সা.)-কে রক্ষা করার জন্য যে ১৪ জন জানবাজ সাহাবি নিজেদের মানবঢালরূপে ব্যবহার করেছেন, জুবাইর (রা.) তাঁদের একজন।

খাইবারের যুদ্ধে তিনি অসীম বীরত্বের পরিচয় দেন। ইহুদি নেতা মুরাহহাব নিহত হওয়ার পর বিশাল দেহ ও বিপুল শক্তির অধিকারী তার ভাই ইয়াসির ময়দানে এলে তিনি তার সঙ্গে লড়েন এবং তাকে চিরতরে ঠাণ্ডা করে দেন। মক্কা-বিজয় অভিযানে মুসলিমসৈন্যের যে দল ছিলেন রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে, সে দলের পতাকাবাহী ছিলেন জুবাইর (রা.)। হুনাইন যুদ্ধে তিনি কাফিরদের একটি গোপন ঘাঁটির ওপর হামলা করে অল্প সময়ের মধ্যে তা সাফ করে ফেলেন। তায়িফ, তাবুক ও বিদায় হজেও তিনি অংশগ্রহণ করেন।



দ্বিতীয় খলিফা ওমর (রা.)-এর খেলাফতামলে সিরিয়ার ইয়ারমুক প্রান্তরে রোমান বাহিনীর সঙ্গে মুসলিমবাহিনীর ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। জুবাইর (রা.) তাতে বীরত্বের সঙ্গে সাহসী ভূমিকা রাখেন। প্রখ্যাত সাহাবি আমর ইবনে আস (রা.)-এর নেতৃত্বে মিসর-বিজয় অভিযানকালে খলিফা ওমর (রা.) অতিরিক্ত ১০ হাজার সিপাহি ও চার হাজার অফিসার প্রেরণ করেন। জুবাইর ছিলেন চার হাজার অফিসারের একজন। সে অভিযানে তাঁর বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার অবদাদে উসতাত কেল্লা নিয়ন্ত্রণে আসে। মিসরের শাসক মুকাওকিস নিরুপায় হয়ে সন্ধির প্রস্তাব দেয় এবং তা গৃহীত হয়। (আসহাবে রাসুলের জীবনকথা : ১/৫৮—৬০)

ref: online

Share on Google Plus

About আরসিএন ২৪ বিডি ডটকম

0 Comments:

Post a Comment

Thanks